শিরোনাম

জাবি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য ছাত্রদলের কাছে! শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

 প্রকাশ: ১৭ মে ২০২৫, ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন   |   ক্যাম্পাস

জাবি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য ছাত্রদলের কাছে! শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

নিশান খান

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ মে থেকে জাবি ছাত্রদল বিনামূল্যে হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি শুরু করে যা চলবে ২২ মে পর্যন্ত। ভর্তির সময় জাবি প্রশাসনের কাছে দেওয়া শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত নম্বরে ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচির খুদেবার্তা পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। এ ঘটনায় গোপনীয়তা ভঙ্গের অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ গ্রুপ এবং ব্যক্তিগত প্রোফাইলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

গতকাল সন্ধ্যা থেকে এ খুদেবার্তা পেয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে জানান শিক্ষার্থীরা।

ক্ষোভ প্রকাশ করে ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ফেসবুকে লিখেছেন, ‌‘প্রশাসন কীভাবে আমাদের ডাটা এভাবে ফাঁস করে? ভিসি স্যারকে এর জবাব দিতে হবে।’

৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ রায়হান লেখেন, ‘শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত তথ্য ছাত্রদলের কাছে কত মূল্যে বিক্রি করলেন জাবি প্রশাসন?’ একই ব্যাচের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মোকসেদ আলী লিখেছেন, ‘আমার অন্য নম্বরে কোনো টেক্সট আসলো না কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় যে নম্বর ব্যবহার করেছি সেটাতে টেক্সট আসছে। তার অর্থ দাঁড়ালো জাবি প্রশাসন ছাড়া এই নম্বর কেউ দেয়নি।’  বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তানজিলা আক্তার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যক্তিগত তথ্য দেওয়ায় আমি সাইবার নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছি।'

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, ‘আমাদের চার হাজারের ওপরে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়েছে। তাদের সবার ডাটা আমাদের কাছে আছে। বাকি সবার ফোন নম্বর আমরা বিভাগ, হলভিত্তিক কালেক্ট করেছি। প্রশাসন থেকে আমরা এ ব্যাপারে কোনো সহযোগিতা নেইনি।’

শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনীক বলেন, ‘যারা রেজিস্ট্রেশন করেছেন, আমাদের ব্যক্তিগত সোর্স থেকে তাদের নম্বর সংগ্রহ করেছি।’

আহ্বায়ক বাবরের কথার ভিত্তিতে শহীদ রফিক-জব্বার হল, শহীদ সালাম-বরকত হল, আ ফ ম কামাল উদ্দীন হলের প্রভোস্টের সঙ্গে কথা বলেছে জাগো নিউজ। তবে তারা জানান, তাদের কাছ থেকে কোনো তথ্য চাওয়া হয়নি এবং তারা দেননি।

বিভাগ পর্যায়ে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং, গণিত বিভাগসহ কয়েকটি বিভাগের সভাপতির সঙ্গেও কথা বলে জানা যায়, তারাও কোনো তথ্য দেননি।

প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের হল থেকে এ ধরনের কোনো ডাটা ছাত্রদলকে দেওয়া হয়নি। আমি আপনাকে এটুকু নিশ্চিত করতে পারি যে, হল থেকে এ তথ্য দেওয়া হয়নি। আমি এ বিষয়ে জানতামই না, আপনার মাধ্যমে জানলাম।’

প্রশাসন তথ্য সরবরাহ করার বিষয়টি অস্বীকার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এবিএম আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা অফিসিয়ালি ছাত্রদলকে কোনো তথ্য দেইনি। শিক্ষা শাখা থেকেও দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, ‘প্রশাসন থেকে আমরা তাদেরকে কোনো তথ্য দেইনি। এ বিষয়ে একটি জরুরি সভা ডেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন হবে কি-না, জানতে চাইলে উপাচার্য বলেন, জরুরি মিটিংয়ের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


ক্যাম্পাস এর আরও খবর: