দীর্ঘদিন ধরে বেতন ভাতা ও ছুটি না পাওয়া এবং বিভিন্ন সময়ে দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ থেকে জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াসহ সবাইকে হত্যা করে এমভি আল বাখেরা জাহাজের লস্কর আকাশ মণ্ডল ওরফে ইরফান। র্যাব-১১ এর উপ অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। মঙ্গলবার রাতে বাগেরহাটের চিতলমারি এলাকা থেকে সাতজন খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ইরফানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ইরফানের ব্যবহৃত মোবাইল, ঘুমের ওষুধ, নিহতদের ব্যবহৃত মোবাইল, ব্যাগ, রক্তমাখা জিন্সের প্যান্ট ও গ্লাভস জব্দ করেছে র্যাব। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরফানের দেওয়া তথ্যমতে র্যাব জানায়, জাহাজের বাজার করার জন্য ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিল। সেখান থেকে তিন পাতা ঘুমের ওষুধ কেনে। আর যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সেটি আগেই জাহাজেই ছিল। কুড়ালটি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছিল। আগের দিন রাতের খাবার রান্নার সময় ইরফান জাহাজের বাবুর্চির অগোচরে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। সেই খাবার খেয়ে সবাই অচেতন হয়ে পড়লে হাতে গ্লাভস পরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে মাস্টারসহ সবাইকে হত্যা করে। ঘটনা যাতে জানাজানি না হয় সে জন্য ইরফান মাস্টারসহ সবাইকে হত্যা করে। র্যাব-১১ এর উপ অধিনায়ক আরও জানায়, জাহাজ মাঝ নদীতে নোঙর অবস্থায় সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করে ইরফান। পরে সবার মৃত্যু নিশ্চিত করে নিজে জাহাজ চালিয়ে হাইমচর এলাকায় এসে অন্য ট্রলার দিয়ে পালিয়ে যায়।
ইতোমধ্যেই জেলা পুলিশ, নৌপুলিশ, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্যক্তিদের স্বজন ও নৌযান শ্রমিকদের দাবি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি আগামী দুই দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে ২০ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা দেওয়ার দাবি করেছেন নৌযান শ্রমিকরা। তা না হলে সারা দেশে ২৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে কর্মবিরতির মাধ্যমে নৌপথ বন্ধ রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।