ভেড়ামারায় ইটভাটা বন্ধের প্রতিবাদে মালিক-শ্রমিকদের বিক্ষোভ

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ইটভাটায় প্রশাসন কর্তৃক ইটভাটা বন্ধ না করার দাবিতে মালিক ও শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বিক্ষোভ মিছিলটি ভেড়ামারার রেলগেট থেকে শুরু হয়ে উপজেলায় গিয়ে শেষ হয়। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন ইটভাটা মালিক সমিতির সদস্যরা এবং কর্মরত শ্রমিকরা। বুধবার (৫ মার্চ) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে অবৈধ ৫টি ইট ভাটা বন্ধ করে দেয় এবং ২টি ইট ভাটার মালিককে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এর আগে ৪ মার্চ সকাল ১০টায় শ্রমিক ও ভাটা মালিকরা একসঙ্গে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করেন। এ সময় ইটভাটা প্রস্ততকারক মালিক সমিতির ভেড়ামারা উপজেলা সভাপতি নাজিমুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক কালাম মন্ডলসহ সকল ইটভাটার মালিকরা একত্রিত হয়ে এর প্রতিবাদ জানান। তারা দাবি করেন, চলতি ২০২৪-২৫ মৌসুমে আমরা ইট প্রস্তুত করার জন্য শ্রমিকদের অগ্রিম টাকাসহ ট্রেড লাইসেন্স, বাণিজ্যিক কর, আয়কর ও ভ্যাট পরিশোধ করে ইটভাটার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি। তারা আরও বলেন, বিগত শেখ হাসিনার সরকারের আমল থেকে ২০১৩ ও ২০১৯ সালের কালো আইন প্রয়োগ করে এই শিল্পকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে। ভেড়ামারা উপজেলায় ৪৫টি ইটভাটায় প্রায় ১৫ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। তাদের আয়ে প্রায় ৭৫ হাজার মানুষ জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে। এই পরিস্থিতিতে ইটভাটা বন্ধ হলে ইটভাটা মালিকরা ব্যাংকের ঋণসহ অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হবে। অন্যদিকে শ্রমিকরা পবিত্র রমজান মাসে অভাব অনটনে পরিবার-পরিজন নিয়ে অসহায়ভাবে জীবন যাপন করবে। ২০১৩ সালে কালো আইন অনুযায়ী, ইটভাটা বন্ধ করা হলে দেশে সরকারি, বেসরকারি সকল উন্নয়ন কাজ বন্ধ হয়ে যাবে।
ভেড়ামারা উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি নাজিমুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক কালাম মন্ডল বলেন, ‘আমরা ২ মাসের সময় চেয়েছি। এর মধ্যে প্রশাসন যদি কোন ইট ভাটায় অভিযান চালিয়ে ক্ষতি করে তাহলে আমরা ইটভাটা মালিকরা, শ্রমিকদের সঙ্গে করে আন্দোলনের ঘোষণা দেব।’এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ নির্দেশনা অনুযায়ী, এই ইট ভাটার সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এই প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ ইট ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হয়। এর মধ্যে পাঁচটি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুইটি ইট ভাটার মালিককে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি আরও জানান, ভেড়ামারা উপজেলা ৪৪টি ইটভাটা রয়েছে। এদের মধ্যে ৩০টি ইটভাটা হাইকোর্টের রিট পিটিশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৩টি ভাটার লাইসেন্স আছে। ১১টি ইট ভাটার কোনো কাগজপত্র নেই, তার মধ্যে ৫টি ইটভাটাকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ২টি ইট ভাটাকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আগামীতে এই অভিযানের মাধ্যমে বাকি অবৈধ ইটভাটাগুলোকে বন্ধ করা হবে।