শিরোনাম

শিক্ষক দুবার, শিক্ষিকা তিনবার বদলির সুযোগ পাবেন

 প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০০ অপরাহ্ন   |   ক্যাম্পাস

শিক্ষক দুবার, শিক্ষিকা তিনবার বদলির সুযোগ পাবেন

দীর্ঘদিন আন্দোলনের পর অবশেষে শূন্য পদের বিপরীতে বদলির নীতিমালা পেয়েছেন বেসরকারি ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা। এতে খুশি শিক্ষকরা। তারা এখন বদলির আবেদন শুরুর অপেক্ষায়। তবে সহসাই বদলি শুরু হচ্ছে না। আগামী বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বদলির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করবে সরকার। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়েরের সই করা নীতিমালাটি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়েছে। এতে বদলির জন্য কিছু শর্ত রয়েছে। পাশাপাশি বদলি নিষ্পত্তির প্রক্রিয়াও বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো-একজন শিক্ষকের চাকরির সময়কাল দুই বছর না হলে তিনি বদলির আবেদন করতে পারবেন না। কর্মজীবনে দুইবারের বেশিও বদলি নিতে পারবেন না। তাছাড়া প্রথমবার বদলির পর আবার দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে। সফটওয়্যারের মাধ্যমে বদলির সম্পূর্ণ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে, যাতে কোনো তদবির বাণিজ্য না হয়।

নীতিমালার তথ্যানুযায়ী-বছরের ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এনটিআরসিএ প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শূন্যপদের চাহিদা বা বিবরণ অনলাইনে প্রকাশ করবে। প্রকাশিত শূন্যপদের বিপরীতে মাউশি বদলির আবেদন আহ্বান করবে। সমপদে পদ শূন্য থাকা সাপেক্ষে বদলির জন্য ১-৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন আগ্রহী শিক্ষকরা। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলির আদেশ জারি হবে। ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান সম্পন্ন হবে।

এনটিআরসিএ’র সুপারিশে শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর চাকরির সময়কাল দুই বছর পূর্ণ হলে বদলির আবেদন করার যোগ্য হবেন একজন শিক্ষক। তাছাড়া কেউ একবার বদলি হয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগ দিলে তারপর দ্বিতীয় দফায় বদলির আবেদন করতে আরও দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে শিক্ষকদের। চাকরিজীবনে একজন শিক্ষক সর্বোচ্চ দুইবার বদলি হওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে একজন শিক্ষিকা কর্মজীবনে সর্বোচ্চ তিনবার বদলির সুযোগ পাবেন।

বদলির ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা ঠিক করা হবে কীভাবে, তা নীতিমালায় বলা হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী—চাকরিতে প্রথম যোগদানের তারিখ থেকে সিনিয়রিটি (জ্যেষ্ঠতা) গণনা করা হবে। আবার একটি শূন্য পদের জন্য একাধিক আবেদন পাওয়া গেলে জ্যেষ্ঠতা, নারী ও দূরত্ব বিবেচনায় বদলি অনুমোদন করা হবে। অর্থাৎ, প্রথমে জ্যেষ্ঠতা দেখা যাবে, এরপর নারীদের অগ্রাধিকার। তারপর দূরত্বের (শিক্ষকের বাড়ি থেকে কর্মস্থল) বিষয়টি দেখা হবে। অসম্পূর্ণ বা ভুল তথ্য সংবলিত আবেদন বিবেচনাযোগ্য হবে না। ইচ্ছাকৃত ভুল প্রমাণিত হলে শাস্তি আরোপ করা হবে। বদলির কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়ার পর এনটিআরসিএ অবশিষ্ট শূন্য পদে নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বদলির সমগ্র প্রক্রিয়া সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। মাউশি এ বিষয়ে সফটওয়্যার তৈরি ও অনলাইন আবেদনের ফরমেট নির্ধারণ করবে। বদলিকৃত শিক্ষকের ইনডেক্স পূর্বের প্রতিষ্ঠান থেকে বদলিকৃত প্রতিষ্ঠানে অনলাইনে ট্রান্সফার হবে। বদলিকৃত শিক্ষকের এমপিও ও অন্যান্য আর্থিক সুবিধাদি এবং জ্যেষ্ঠতার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। বদলির আবেদনকে অধিকার হিসেবে শিক্ষকরা দাবি করতে পারবেন না বলে নীতিমালায় স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে। তাছাড়া বদলি হওয়ার পর কোনো শিক্ষক আর কোনো ধরনের টিএ/ডিএ ভাতা পাবেন না।

বদলির আদেশ জারির ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে বদলিকৃত শিক্ষকের অবমুক্তি নিশ্চিত করতে হবে। অবমুক্ত হওয়ার পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান যোগদানের তথ্য চেয়ারম্যান, এনটিআরসিএ ও মাউশির মহাপরিচালককে অনলাইনে অবহিত করবেন। অবমুক্তি হতে যোগদান পর্যন্ত দিবসগুলো কর্মকাল হিসেবে গণ্য হবে।


ক্যাম্পাস এর আরও খবর: