শিরোনাম

ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শেকৃবিতে সংঘর্ষ

 প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন   |   ক্যাম্পাস

ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে শেকৃবিতে সংঘর্ষ

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসে মন্তব্যের জেরে সিনিয়র-জুনিয়র কথা-কাটাকাটি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কিছু শিক্ষার্থী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে ঝামেলা উস্কে দেওয়ার অভিযোগ তুলে মিছিল ও কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। জানা যায়, রবিবার (২ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়টির বিজয়-২৪ হলের ক্যান্টিন সংক্রান্ত একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে মন্তব্য করাকে কেন্দ্র করে হলটির ৮০ ও ৮১ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয় এবং ইফতারের পূর্ব পর্যন্ত উত্তেজনা বিরাজ করে।

জানা যায়, ৮১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম ত্বোহা শনিবার (১ মার্চ) ফেসবুকে বিজয়-২৪ হলের ক্যান্টিন নিজ ব্যাচের কিছু শিক্ষার্থীর মাধ্যমে পরিচালনার একটি প্রস্তাবনা দেন। তার পোস্টের কমেন্টে ৮০ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু রায়হান হৃদয় শুধুমাত্র এক ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ক্যান্টিন পরিচালনার বিরোধিতা করেন। পরবর্তীতে রবিবার এ বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয়। একপর্যায়ে ৮১ ব্যাচের মাহবুর ৮০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মারুফ হাসানকে আঘাত করে এরপর উভয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই খবরটি ছড়িয়ে পড়লে দুই পক্ষের শিক্ষার্থীরা বিজয়-২৪ হলে অবস্থান নেন।

এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও উভয়পক্ষ নিয়ে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হলে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য, প্রক্টর, প্রভোস্টসহ শিক্ষকরা এসে তা নিভৃত করেন। জুনিয়র মুজাহিদুল ইসলাম ত্বোহা শেকৃবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আবু রায়হান হৃদয় বলেন, ‘ফেসবুকে মন্তব্যকে কেন্দ্র করে মুজাহিদুল ইসলাম ত্বোহা তার সিনিয়র আমার রুমমেটকে ফোন করে রুম থেকে হলের নিচে নামতে বলে। এ সময় আমি তাকে হুমকি দিচ্ছিস কিনা প্রশ্ন করলে সে বলে হা দিচ্ছি তুই নাম। পরে নিচে নামলে ঝামেলা হয়।’ ৮০ ব্যাচের শিক্ষার্থী মারুফ হাসান বলেন, ‘আমার ব্যাচমেটকে জুনিয়র হুমকি দিয়ে নিচে নামতে বলেছে বলে আমাদের ডাকলে আমি নিচে নামি। ওদের থামাতে গেলে আমাকে মারধর করে।’

জানতে চাইলে অভিযুক্ত মুজাহিদুল ইসলাম ত্বোহা বলেন, ‘আমার বাপ-মা তুলে কথা বলায় ভাইয়ের সঙ্গে আমার একটু তর্কাতর্কি হয়েছে। তুই করে সিনিয়রকে হলের নিচে ডাকার কথা স্বীকার করে মাহবুর বলেন, ‘আমি বুঝতে পারিনি উনি সিনিয়র ছিলেন। আমি কাউকে মারিনি তারাই আমাকে মেরেছে, আমাকে মারার সময় ভাইদের হাতে লাগতে পারে।’

হল প্রাধ্যক্ষ জাহিদুল রহমান বলেন, ‘সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ৮১ ব্যাচের যে ছেলে ক্যান্টিনের খাবারে মান নিয়ে মন্তব্য করেছে, তার মন্তব্যে সঙ্গে খাবারের মানের কোনো সম্পর্ক নেই। সে আমার সঙ্গে আলোচনা না করেই নিজে ক্যান্টিন পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চেয়ে ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছে। তবে বর্তমানে ক্যান্টিন খুব সুন্দর ভাবেই চালাচ্ছে এবং খাবারের মান যথেষ্ট ভালো আছে।’ পরবর্তীতে রাত সাড়ে ৯টায় ইফতারের আগে সংঘর্ষের ঘটনায় শেকৃবি শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের ইন্ধন আছে দাবি করে সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে একটি অংশ তাকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা দিয়ে মিছিল এবং তার কুশপুত্তলিকা দাহ করে।

শেকৃবি ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবীর বলেন, ‘আমি তো আসলে জানিই না কে কাকে মারছে, শুনলাম সিনিয়রই নাকি জুনিয়রকে মারছে। প্রথমে শুনলাম শিবিরের পোলাপানের সঙ্গে ঝামেলা আবার শুনি ময়মনসিংহের সঙ্গে আবার শুনি বগুড়ার সঙ্গে আরেকবার শুনি ব্যাচের পোলাপান। ওখানকার সিসি ফুটেজ দেখলে বোঝা যাবে। আমি গিয়েছিলাম যেন ঘটনা বড় না হয়, আমি এসব উস্কে দেইনি।’ শেকৃবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আরফান আলি বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করেছি, ফুটেজ দেখে পরবর্তীতে ব্যবস্থা।’

ক্যাম্পাস এর আরও খবর: